মুরাদনগর প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন ১২নং রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউপি’র উপ-নির্বাচনে প্রচারণার সময় হামলার ঘটনায় দু’টি মামলা হয়েছে। নৌকা সমর্থক কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আল-আমিন সরকারসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে একটি মামলা করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুবকর সমর্থক কবির হোসেন। অপর দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুবকর সমর্থক খবির হোসেন ভুইয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে পাল্টা আরেকটি মামলা করেন নৌকা প্রার্থী ইকবাল সরকার। গত শুক্রবার রাতে ওই দুই মামলা রুজু হয়েছে নিশ্চিত করেন বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। ওই ঘটনায় পর স্থানীয়দের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান সফু মিয়া সরকার সম্প্রতি মারা যাওয়ায় ওই ইউনিয়নে আগামী ১০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইকবাল হোসেন সরকার (নৌকা), ইসলামী আন্দোলনের আব্দুল হক (হাত পাখা), স্বতন্ত্র আবুবকর (ঘোড়া), উজ্জল আহম্মেদ (রজনী গন্ধা), মোমেন মিয়া (আনারস) ও জাহাঙ্গীর আলম (চশমা) প্রতিক নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু বকর গত বুধবার সন্ধ্যায় ইউনিয়নের সাহেবনগর এলাকায় গণসংযোগ শেষে রামচন্দ্রপুর বাজারে ফিরছিলেন। জায়েদ আলী মার্কেটের সামনে পৌছামাত্র নৌকার সমর্থকরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৭টি মোটর সাইকেল ভাংচুর ও ৯ জনকে পিটিয়ে আহত করে। আহতদের মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার আশংকাজনক দেখে রাতেই ৩ জনকে কুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। গুরতর আহতরা হলেন- জসিম উদ্দিন (৪৬), মুকবল হোসেন (৪৫) ও ফারুক মিয়া (২০)।
হামলার শিকার স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু বকর বলেন, ‘কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকারের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের ব্রাহ্মন চাপিতলা গ্রামে। তাই এ ইউনিয়নে গত ২৫ বছর ধরে প্রতিদ্বন্দিতা বিহীন চেয়ারম্যান এবং সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছে। তিনি প্রভাব খাটিয়ে আপন বড় ভাই সফু মিয়া সরকারকে চেয়ারম্যান এবং মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় ১২টি সদস্য বানাতেন। এবার তার ভাই মারা যাওয়ায় আগামী ১০ ডিসেম্বর এ ইউনিয়নে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তুু এবারো জাহাঙ্গীর আলম সরকার তার ভাতিজা ইকবাল সরকারকে চেয়ারম্যান বানাতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে।’
তবে তাঁর অভিযোগ অস্বীকার করে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও তার ভাতিজা নৌকা মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইকবাল হোসেন সরকার বলেন, ‘তাদের নেতা-কর্মীদের পক্ষ থেকে কোন প্রকার হামলা করা হয়নি। ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী আবু বকর নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এ নাটক সাজিয়েছে।’
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু বকরের গণসংযোগে হামলায় ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’টি মামলা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক কবির হোসেন বাদী হয়ে একটি এবং নৌকা প্রার্থী ইকবাল সরকার বাদী হয়ে অপর মামলাটি করেন। উভয়ের মামলার তদন্ত চলছে। কেউ গ্রেফতার হয়নি।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদ আহাম্মদ শিকদার বলেন, ‘উপ-নির্বাচনে ওঠান বৈঠক ছাড়া অন্য কোন পন্থায় প্রচার-প্রচারণা চালানো আচরণ বিধি লঙ্গন।’
মুরাদনগর উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল বলেন, ‘রামচন্দ্রপুর উপ-নির্বাচনে ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত। যারা ঘটনার শিকার হয়েছেন তারা মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page